বিভিন্ন নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা হয়নি তামিম ইকবালের। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষ চারে জায়গা করলেও, সেই তামিমই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাননি বা যেতে পারেননি। এরপর থেকে তিনি আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচেও অংশ নেননি। তামিমের ভক্তরা এখনও আশা নিয়ে অপেক্ষা করেন, হয়তো আবার একদিন বাংলাদেশ দলের জার্সিতে তাকে দেখতে পাবেন… কিন্তু না, তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিজের অবস্থান পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছেন।
সম্প্রতি শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে আলাপকালে তামিম এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করেন। বিপিএল খেলতে বাংলাদেশে এসে মোহাম্মদ নবীসহ কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটারের সঙ্গে নৈশভোজ করছিলেন আফ্রিদি। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, আফ্রিদির জামাতা শাহীন শাহ আফ্রিদিও।
রাতের খাবার খাওয়ার সময় আফ্রিদি তামিমের কাছে জানতে চান, “তামিম, তুমি কি পুরোপুরি অবসর নিয়ে ফেললে? শেষ?” তখন তামিম পাশের একটি চেয়ারে বসে ব্যাট নেড়ে বললেন, “জাতীয় দল থেকে… জাতীয় দলে আর খেলছি না।”
এ সময় মোহাম্মদ নবীও তার অবসর পরিকল্পনা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর তিনি ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন এবং শুধু টি-টোয়েন্টি খেলবেন। আফ্রিদি মজা করে বলেন, “তুমি তো এখনো তরুণ, খেলতে থাকো, অবসর নেওয়ার কী দরকার?”
মাশরাফি বিন মর্তুজা অধিনায়ক হওয়ার পর বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেট শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তামিম যখন অধিনায়ক হন, বাংলাদেশ আরো শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নও দেখে। তবে সাকিব আল হাসানের সাথে দ্বন্দ্বের কারণে তামিম অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন এবং তারপর বিশ্বকাপে যাননি। সাকিবের অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ দল যে পারফরম্যান্স করেছে, তা ছিল বিব্রতকর। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর বাংলাদেশ ৮ নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করে, যেখানে তাদের নিচে ছিল শুধু শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডস।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দিকে তাকিয়ে অনেকেই আশা করছিলেন, শেষবারের মতো যদি তামিমকে জাতীয় দলে দেখা যায়। কেউ কেউ তামিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নও দেখেছিলেন। কিন্তু সব আশায় গুঁড়েবালি হয়ে গেছে। আফ্রিদির সঙ্গে তামিমের কথোপকথনে স্পষ্ট হয়ে যায়, ৭০ টেস্ট, ২৪৩ ওয়ানডে ও ৭৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা তামিমের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখনই সমাপ্ত।