আজকের ম্যাচটা যে রাজশাহী খেলতে পারবে সেটাই অনিশ্চিত ছিল। পারিশ্রমিক ইস্যুতে এই ম্যাচটি বয়কট করেছে দুর্বারদের বিদেশি ক্রিকেটাররা। আর বিপিএলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, অন্তত দুইজন বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে একাদশ সাজাতে হয়। এমন অবস্থায় বিপিএল টেকনিক্যাল কমিটির বিশেষ অনুমতিতে কোনো বিদেশি ছাড়াই ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় রাজশাহী। মাঠের বাইরের এতসব বিতর্কিত কাণ্ডের একটুও ছাপ পড়েনি তাদের মাঠের ক্রিকেটে!
আসরের প্রথম আট ম্যাচে অপরাজিত ছিল রংপুর রাইডার্স। নিজেদের নবম ম্যাচে প্রথমবার রাজশাহীর মুখোমুখি হয় রংপুর। আর সেখানেই থামে তাদের জয়রথ। এবার ফিরতি দেখায়ও রাজশাহীর কাছে পাত্তা পেল না টেবিল টপাররা। আর সেটাও ‘দেশি’ রাজশাহীর কাছে!
মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৮ রান করেন সানজামুল ইসলাম। জবাবে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর। ফলে ২ রানের জয় পেয়েছে রাজশাহী।
আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল দলটি। তবে তাসকিন আহমেদ ও সানজামুল ইসলামের ব্যাটে সেই বিপর্যয় কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানের পুঁজি পায় রাজশাহী। এই পুঁজি নিয়েই রংপুরকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দেন তাসকিন-মৃত্যুঞ্জয়রা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাসকিন ফেরান রংপুরের অধিনায়ক স্টিভেন টেলরকে। ব্যক্তিগত ২ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন টেইলর।
এরপর থিতু হতে পারেননি সাইফ হাসান। মৃত্যুঞ্জয়ের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শূন্য রানে। এরপর দলটির হতাশা বাড়িয়েছেন গ্লোবাল সুপার লিগ জেতানো সৌম্য সরকারও। চোটের কারণে বিপিএলের শুরু থেকে খেলতে পারেননি তিনি। রাজশাহীর বিপক্ষে ফিরলেও ব্যাট হাতে ফিরেছেন মাত্র ৮ রান করে তাও আবার ১৩ বলে। মৃত্যুঞ্জয়ের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
সেই ওভারের শেষ বলে শেখ মেহেদী রানের খাতা খোলার আগেই আউট সাইড এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। লাফিয়ে সেই ক্যাচ মুঠোয় নিয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার আকবর। এরপর নুরুল হাসান সোহান ২ রান করে ফিরলে ৩০ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর। ইফতিখার আহমেদ ফেরেন ১৪ রান করে। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তবে খুশদিলকে থিতু হতে দেননি মোহর শেখ অন্তর।
শেষদিকে সাইফউদ্দিন একপ্রান্ত আগলে রেখে খেললেও দলকে জেতাতে পারেননি। তাকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন রাকিবুল। তবে তাও জয় পাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ ছিল না। ২১ বলে ২০ রান করা রাকিবুলকে ১৯তম ওভারে ফেরান তাসকিন। তাতে করে সাইফউদ্দিনের সঙ্গে তার ৪২ রানের জুটি ভাঙে। সাইফউদ্দিন খেলেন ৩১ বলে ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস।
এর আগে আকবর আলীর ১৯ ও সানজামুল ইসলামের অপরাজিত ২৮ রানে কোনো মতে ১০০ পেরুনো ইনিংস দাঁড় করায় রাজশাহী। অধিনায়ক তাসকিনের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ রান। নবম উইকেটে সানজামুল ও তাসকিন মিলে যোগ করেন ১৯ রান। আর দশম উইকেটে সানজামুল ১৬ রান যোগ করেন মোহরকে নিয়ে। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি নিশ্চিত হয় দলটির। রংপুরের হয়ে ৩টি উইকেট নেন খুশদিল। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন সাইফউদ্দিন ও রাকিবুল হাসান। একটি উইকেট যায় আকিফ জাভেদের ঝুলিতে।