নেপালে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৯ জনে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়। টানা কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালের বিশাল অংশজুড়ে বন্যা শুরু হয়। বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস এই দুর্যোগকে আরও তীব্র করেছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপালের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো। কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক মহাসড়ক এবং রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে, শত শত বাড়ি ও সেতু ধ্বংস বা ভেসে গেছে, এবং অসংখ্য পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন।
রাজধানী কাঠমান্ডুতে কমপক্ষে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং সেখানে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। বন্যায় সমস্ত হাইওয়ে ও সংযোগ সড়ক ডুবে যাওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শনিবার কাঠমান্ডু উপত্যকায় ১৯৭০ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়, যে বছর থেকে নেপালে প্রথম বৃষ্টিপাত পরিমাপ শুরু হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উদ্ধারকাজের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪,২২২ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪২ জন আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নেপালের পুলিশ, আর্মড পুলিশ ফোর্স এবং সেনাবাহিনী বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করছে।
কাঠমান্ডু পোস্ট আরও জানায়, পানিবিদ্যা ও আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই সতর্ক করেছিল যে আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। তবে কর্তৃপক্ষের অক্ষমতার কারণে এই বিপর্যয় ও প্রাণহানি রোধ করা সম্ভব হয়নি। বর্ষার ধরণেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে; আগে বর্ষা সেপ্টেম্বরেই শেষ হতো, কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে এটি অক্টোবর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হচ্ছে।