কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে গিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে, এখন নিজেরাই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার নিশানায় পড়েছে ভারত, যে দেশটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী হিসেবে পরিচিত।
ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতরভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞার সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও প্রতিবেশী দেশগুলোর নাগরিকরা। তারা দ্রুত ‘র’ এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছেন।
তবে, ভারতের পক্ষ থেকে এ সুপারিশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভারত সরকারের অভিযোগ, সংস্থাটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার ইউএসসিআইআরএফ তার ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। এতে ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘন ও তাদের জীবন ও সম্পত্তির ওপর আক্রমণের কিছু ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, ২০২৩ সালে নিউইয়র্কে একজন আমেরিকান শিখ নাগরিক হত্যাচেষ্টায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এই হত্যাচেষ্টার সঙ্গে ভারতের বিকাশ ইয়াদভের নামও যুক্ত করেছে।
ইউএসসিআইআরএফ প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতকে ‘কান্ট্রি অফ পার্টিকুলার কনসার্ন’ (সিপিসি) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সিপিসি তালিকায় যুক্ত হওয়া মানে, ওই দেশটির সরকারের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন বা সহনশীলতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া।
এদিকে, ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর সহায়তায় পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে, যা দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের গভর্নর কামরান তেসোরি দাবি করেছেন, ‘র’-এর সংশ্লিষ্টতায় এসব সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে গুপ্তহত্যা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে।
ফেসবুক ব্যবহারকারী আবু তাহের তপন, আশরাফ তুহিন, আরিফ সিকদার, ফয়সাল হোসেনসহ আরও অনেকেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, ভারত বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক, এবং এটি তার কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক সমালোচনার সম্মুখীন হবে।