চীন, ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ, দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হলো চীনের ইউনান প্রদেশের নুজিয়াং সাহিত্যশাসিত অঞ্চল। মাত্র ১০ বছরের মধ্যে, দারিদ্র্যপীড়িত এই অঞ্চলটি এখন স্বাবলম্বী শহরে পরিণত হয়েছে। নুজিয়াংয়ের উদাহরণ সামনে রেখে বাংলাদেশও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, এবং কঠোর পরিশ্রম।
নুজিয়াংয়ের দারিদ্র্য বিমোচনের মূল কৌশল দুটি ছিল: প্রথমত, পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, এবং দ্বিতীয়ত, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। শুরুতে, পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্থানান্তর একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে শিক্ষা ও নাগরিক সুবিধার উন্নতির মাধ্যমে তারা এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত। জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে, এখানে বয়স্করা নতুন দক্ষতা অর্জন করছেন, এবং নারীরা গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিয়ে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করছেন।
নুজিয়াংয়ের উন্নতির পেছনে রয়েছে আয়ের উৎস বৃদ্ধি এবং শিক্ষার প্রসার। এখানকার জনগণকে সক্ষম করার পাশাপাশি, কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পর্যটন শিল্পের বিকাশও বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। নুজিয়াংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করছে, যা স্থানীয় অর্থনীতির শক্তিশালী উন্নতি ঘটাচ্ছে।
একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো বেসবল বল তৈরির কারখানা। চীন মূলত ফুটবলপ্রেমী দেশ হলেও, এখানে বেসবল বল তৈরির শিল্পটি বিশেষভাবে বিকশিত হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় এই খেলার সরঞ্জাম তৈরির মাধ্যমে নুজিয়াংয়ের নারীরা কুটির শিল্পের মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করেছেন, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
নুজিয়াংয়ের সাফল্য বাংলাদেশের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হতে পারে। বাংলাদেশও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্য অর্জন করতে পারে। এজন্য প্রয়োজন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষার প্রসার, এবং স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি। নুজিয়াংয়ের গল্প প্রমাণ করে যে, সঠিক পরিকল্পনা এবং নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে দারিদ্র্য জয় করা সম্ভব।