বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরে নবাগত দল হিসেবে অংশ নেয় দুর্বার রাজশাহী। তাদের মাঠের পারফরম্যান্স শেষে কিছুটা চমক দেখালেও পুরো আসরজুড়ে তারা ছিল সবচেয়ে বিতর্কিত দল। পারিশ্রমিক ইস্যুতে বারবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসা রাজশাহী, বিদায়ের পরেও থামায়নি বিতর্ক। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পর তারা ‘থিম সং’ প্রকাশ করায় নেটিজেনদের মাঝে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে গেছে।
চলতি বিপিএলের লিগ পর্ব শেষ হয়েছে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি), এবং রাজশাহীর বিদায় নিশ্চিত করেছে খুলনা টাইগার্স। তারা প্লে-অফে ওঠার মাধ্যমে রাজশাহীর টুর্নামেন্ট শেষ হয়। রাজশাহীর খেলা শেষ হয়েছিল ২৭ জানুয়ারি, কিন্তু তাদের ভাগ্যনির্ধারণে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ফলে অর্থসংকটে থাকা দলটির খরচ নিয়ে নেটিজেনরা ব্যাপক রসিকতা করেছেন।
কিছু নেটিজেন মন্তব্য করছেন যে, রাজশাহী বিদায় নেওয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষের লাভই হয়েছে! এমন মন্তব্যে আরো বাড়তি উত্তেজনা যোগ করেছে তাদের সর্বশেষ ‘থিম সং’ প্রকাশ। প্রশ্ন উঠেছে, টুর্নামেন্ট চলাকালে কেন এই গান প্রকাশ করা হয়নি, আর বিদায়ের পর কীভাবে এই গান দিয়ে উদযাপন সম্ভব! সাধারণত একটি দলের ‘থিম সং’ টুর্নামেন্ট শুরুর দিকে প্রকাশ করা হয়, তবে বিপিএল থেকে বিদায়ের পর গানের প্রেরণাদায়ক বার্তা কতটা কার্যকরী হতে পারে?
প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের নির্ধারিত সময়ে পারিশ্রমিকের একটি অংশ পরিশোধ করতে হয়, তবে দুর্বার রাজশাহী এ বিষয়ে সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। এই বিপিএলের মাঝপথে তাদের ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক বকেয়া থাকায় একদিন অনুশীলন বাতিল করেছিলেন, এবং এক ম্যাচে কোনো বিদেশি ক্রিকেটার মাঠে আসেননি, যার ফলে রাজশাহী ওই ম্যাচটি বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়া খেলেছিল। এছাড়া, ক্রিকেটারদের দেওয়া পারিশ্রমিকের চেক বাউন্সের (চেক ফেরত) ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে।
দুর্বার রাজশাহী, চলতি বিপিএলের অন্যতম বিব্রতকর ইস্যুর মধ্যে ফিক্সিংয়ের অভিযোগও ছিল। বিপিএলের একাদশ আসরে অন্তত আটটি ম্যাচে সন্দেহজনক পারফরম্যান্সের অভিযোগ উঠেছে, এবং এর সাথে জড়িত সন্দেহে ১০ ক্রিকেটারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে, যারা চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছেন। ক্রিকবাজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজশাহী এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে সর্বোচ্চ ১২ জন করে ক্রিকেটার সন্দেহের তালিকায় আছেন।
রাজশাহীর দুটি ম্যাচও সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ এক গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বলেন, “দুর্বার রাজশাহী যা করেছে, তা একটা টুর্নামেন্ট শেষ করার জন্য যথেষ্ট ছিল। তবে পাঁচ মাস আগে পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। তখন আমাদের জানানো উচিত ছিল বিপিএল হবে কি না। আমাদের ভাবমূর্তি খারাপ হয়েছে, তবে আমরা তা স্বীকার করছি। তবে এখান থেকে বেরিয়ে আসব, আগামী বিপিএলে দেখবেন।”