শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন প্রান্তিক নওরোজ নাবিল। তবে তার অবসর নেয়ার পরও প্রশ্ন ছিল, এখন কোথায় আছেন নাবিল, কী করছেন, ক্রিকেট ছাড়ার পর তার দিনগুলো কেমন কাটছে। অবশেষে নাবিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, বিডিক্রিকটাইমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তার জীবনের বর্তমান পরিস্থিতি জানালেন, যা শুনে মন খারাপ হতে পারে সবার।
ক্রিকেট ছাড়ার কারণ সম্পর্কে নাবিল বলেন, “হেলথ ইস্যু, আর কিছু না। এখন একটু সামলে নিয়েছি, তবে পুরোপুরি ঠিক হয়নি। শুরুতে অনেক কষ্ট হতো। যেটা ছিল আমার জীবনের প্যাশন, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খেলার ভাবনা আসতো, সেটি এখন আর নেই।”
ফুসফুসের সমস্যার কারণে খেলাটা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নাবিল অনেক চেষ্টা করেছেন। ফিল্ডিং ও ব্যাটিংয়ের মাঝে ঘুমানো, ভারি খাবার এড়িয়ে চলা, ২ ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে ওঠার মতো প্রচেষ্টা ছিল তার। “দুই বছর আগে যখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাই, তখন চিকিৎসক বলেছিলেন, এটি সম্ভব নয়। কিন্তু আমি বলেছিলাম, আরেকটু চেষ্টা করি, আরেকটু দেখি। তবে এখন শরীরের মেটাবলিজম এমন যে, আর লড়াই করতে পারছি না। আগে ৫০ ওভার ফিল্ডিং করে ব্যাটিংয়ের আগে ১০ মিনিট ঘুমিয়ে যেতাম, এরপর তরল খাবার খেতাম।”
নাবিল আরও জানান, “এখন সিঁড়ি দিয়ে উঠলেও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলার পরিস্থিতিতে আমি নেই।”
নাবিলের পরিবার এবং বন্ধুরাও জানতেন, যদি তিনি আরও এক বিন্দু শক্তি পেতেন, তবে ক্রিকেট ছাড়তেন না। “প্রথমে আমার পরিবার ও বন্ধুরা হতাশ হয়েছিল। সবাই জানতো আমার ক্রিকেটের প্রতি কতটা প্যাশন ছিল। তবে সবাই জানতো, যদি আরেকটু চেষ্টা করতে পারতাম, তবে আমি ছাড়তাম না।”
এদিকে, নাবিল বর্তমানে ক্রিকেট না দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে মন খারাপ না হয়। “আমি ক্রিকেট খেলা দেখি না। বিপিএলেও কোনো ম্যাচ দেখিনি, স্টেডিয়ামে যাইনি। শুধু জানি বরিশাল জিতেছে। ভবিষ্যতে সাকিবের সঙ্গে কথা বললে বলব, ভালো করে খেলো।”
নাবিলের জীবনে পরিবর্তন এসেছে এবং তিনি এখন শুধু বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন। “আমার জীবনের প্রথম প্রাধান্য এখন বেঁচে থাকা। চেষ্টা করছি কীভাবে স্বাভাবিক জীবন চালিয়ে যাওয়া যায়। জীবন খুব অনিশ্চিত, ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। তবে আল্লাহর কাছে চাওয়া, একটু নিঃশ্বাস নিয়ে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চাই। যখন সব কিছু ভালো লাগবে, তখন হয়তো ভাবব ক্রিকেটে ফিরব।”
নাবিলের গল্পে একটা গভীর শিক্ষা রয়েছে। জীবন যখন সংকটময়, তখন কেবল বেঁচে থাকা ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হয়ে ওঠে।