‘সে টাকা দেয়ার লোক না!’—বিপিএলের পারিশ্রমিক না পাওয়ার ঘটনায় দুর্বার রাজশাহীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুর রহমান সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন দলটির এক ক্রিকেটার। বারবার সময় চেয়ে পারিশ্রমিক না দেওয়ায় মালিকপক্ষের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে বিসিবিকে রাজশাহীর মালিকানা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন দলের ক্রিকেটারা। তাদের দাবি, যদি বিসিবি দলটির মালিকানা না নেয়, তবে সেরা চারে পৌঁছালেও ম্যাচ খেলবেন না তাসকিন আহমেদ ও এনামুল হক বিজয়রা।
পারিশ্রমিক না পেয়ে চট্টগ্রামে অনুশীলন বয়কট করেছিলেন রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। বিসিবি সভাপতির হস্তক্ষেপে ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পেয়ে খেলা শুরু করেছিলেন তাসকিন আহমেদ ও এনামুল হক বিজয়। যদিও তাৎক্ষণিক সমাধান হলেও সমস্যা পুরোপুরি দূর হয়নি। চট্টগ্রামে হোটেল ভাড়া দিতে না পারা এবং ঢাকায় হোটেল পরিবর্তন—এসব বিষয় ক্রিকেটারদের চিন্তা বাড়িয়েছে।
রংপুরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বিজয়রা আবারও বেঁকে বসেন, জানিয়ে দেন পারিশ্রমিক না পেলে মাঠে নামবেন না তারা। এরপর মালিকপক্ষ তাদের হাতে চেক তুলে দেয়। রংপুরের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ মজার ছলে বলেন, ‘মিরপুরের উইকেটের মতো চেক বাউন্স করলে ক্রিকেটারদের বিপদ হবে।’ কিন্তু একদিন পরেই আবারও চেক বাউন্স হয়েছে।
দুদিন আগে হাতে পাওয়া চেক ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়। ২ তারিখ পর্যন্ত সময় থাকলেও ততদিনে চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় ক্রিকেটারদের দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, পারিশ্রমিক ছাড়াও ১৮ দিনের দৈনিক ভাতাও এখনো দেয়া হয়নি। রাজশাহীর ক্রিকেটারদের মতে, ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক শফিকুর রহমান টাকা দেয়ার লোক নন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার বলেন, ‘২ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে চেক থেকে টাকা তোলার, কিন্তু আজকেই তো চেক বাউন্স করেছে। মনে হয় মালিক আর আমাদের কোনো টাকা দেবে না! ১৮ দিনের ডিএও বাকি। যিনি মালিক, তিনি জানতেন চেক বাউন্স করবে, এজন্যই তিনি এটা দিয়েছেন। তিনি টাকা দেয়ার লোক না!’
দুদিন আগে বিসিবির মাহবুব আনাম জানিয়েছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পারিশ্রমিকের সমস্যা সমাধান হবে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকের উপর আস্থা হারানোর পর রাজশাহীর ক্রিকেটাররা এখন বিসিবির দিকে তাকিয়ে আছেন। তাদের আশা, বিসিবি যদি দলটির মালিকানা নেয়, তবে তারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন। যদি তা না হয়, তবে রাজশাহীর হয়ে বিপিএলে আর কোন ম্যাচ খেলতে চাইছেন না তারা।
এ বিষয়ে একজন ক্রিকেটার বলেন, ‘আমাদের এখন একমাত্র ভরসা বিসিবি। যদি বিসিবি দলটি গ্রহণ করে, তবে আমরা খেলতে নামব, নাহলে খেলার প্রশ্নই আসে না।’