কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বামপন্থী ১৪ দলীয় জোটকে নির্বাচনের বাইরে রেখে নির্বাচন আয়োজন করা হলে তিনি তাতে অংশ নেবেন না। তিনি বলেন, “আমরা জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চাই। শুধু বিএনপি বা জামায়াত অংশ নিলে আমি গামছা নিয়ে ভোটে যাব না।”
রোববার টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈল ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আওয়ামী লীগের ৪৩ শতাংশ, জাতীয় পার্টির কিছু অংশ ও আমাদের নিজস্ব ভোট আছে। কিন্তু যদি আওয়ামী লীগের ভোটাররা ভোট দিতে না পারে, যদি জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে বাইরে রাখা হয়, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “ইউনূস সাহেবকে অনেক বড় মানুষ ভেবেছিলাম। শেখ হাসিনা যখন আপনাকে সুদখোর বলেছিল, তখন আমি আপনার পাশে ছিলাম। কিন্তু এনজিও চালানো আর দেশ চালানো এক জিনিস নয়। এখনো সময় আছে—সব দলকে নিয়ে নির্বাচন করুন, নইলে বড় বিপদে পড়বেন।”
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “এই দল সব সময় উল্টো পথে চলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। আজ তারা আবার রাজনীতিতে ফিরতে চায়। জামায়াত যদি একা নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাঁচটি আসনও পায়, তাহলে ভাবব আমার রাজনীতি এখনো শেখা হয়নি। তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকার জন্য কাঁদতে কাঁদতে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকার যেমন জুলুম করেছে, তেমনি বিএনপিও ক্ষমতায় এসে চাঁদাবাজি করেছে। এখন মানুষ ধানের শীষ দেখলে ভয়ে কাঁপে, আগে সেটা ছিল আশার প্রতীক।”
নিজ দলের অবস্থান স্পষ্ট করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আমি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ করি না, আমি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার রাজনীতি করি। জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয়, তবে আমাকেই প্রথম গ্রেপ্তার করুন। কারণ জয় বাংলা বলেই আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি, জয় বাংলা বলেই জীবন দিতে রাজি।”
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বহেড়াতৈল ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান।

