এশিয়া কাপ ট্রফি বিতর্ক ও ছবি ব্যবহারে বিরোধ: আইসিসির বোর্ড সভায় বাড়তে পারে উত্তেজনা

এশিয়া কাপ ট্রফি বিতর্ক ও ছবি ব্যবহারে বিরোধ: আইসিসির বোর্ড সভায় বাড়তে পারে উত্তেজনা

এশিয়া কাপ ট্রফি বিতর্ক, ছবি ব্যবহারের অধিকার নিয়ে টানাপোড়েন—উত্তপ্ত হতে পারে আইসিসির বোর্ড সভা

দুবাইয়ে আগামী ৭ নভেম্বর বসছে আইসিসির ত্রৈমাসিক বোর্ড সভা, তার আগে ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে প্রধান নির্বাহীদের বৈঠক। এবারের সভা ঘিরে ক্রিকেট দুনিয়ায় তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। কারণ, একাধিক বিতর্কিত বিষয় উঠতে যাচ্ছে আলোচনায়—এশিয়া কাপের ট্রফি বিতর্ক, যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের প্রশাসনিক সংকট, এবং খেলোয়াড়দের নাম-ছবি ব্যবহারের অধিকার নিয়ে আইসিসি ও ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউসিএ) বিরোধ।

🏆 এশিয়া কাপ ট্রফি নিয়ে অচলাবস্থা

যদিও এটি আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে নেই, তবুও ইএসপিএনক্রিকইনফোর তথ্য অনুযায়ী, বোর্ড সভায় এশিয়া কাপ ট্রফি নিয়ে বিতর্ক আলোচনায় আসবে। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জেতার পর ভারত ট্রফি নেয়নি—কারণ, তারা পিসিবি চেয়ারম্যান ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এএসিসি) সভাপতি মহসিন নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
ফাইনালের পর থেকে ট্রফিটি প্রকাশ্যে দেখা যায়নি; জানা গেছে, বর্তমানে এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে এএসিসির একটি অফিসে সংরক্ষিত আছে। নাকভি জানিয়েছেন, ট্রফি হস্তান্তরের এখতিয়ার তাঁরই, এবং তিনি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় বৈঠকে সরাসরি না অনলাইনে যোগ দেবেন—তা এখনও নিশ্চিত নয়।

🧍‍♂ আইসিসি বনাম ডব্লিউসিএ: ছবি ও পরিচয় ব্যবহারে বিরোধ

আইসিসি নিজস্ব মোবাইল গেম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে খেলোয়াড়দের নাম ও ছবি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ডব্লিউসিএ অভিযোগ করেছে, আইসিসি খেলোয়াড়দের অনুমতি ছাড়াই তাদের পরিচয় বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে।
ডব্লিউসিএ তাদের ৬০০ খেলোয়াড়কে জানিয়েছে, “আইসিসি কোনো যৌথ চুক্তি ছাড়াই আপনাদের নাম ও ছবি ব্যবহার করছে।” যদিও ভারত ও পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা এই সংগঠনের সদস্য নন।
এই বিষয়েই প্রধান নির্বাহীদের কমিটি (সিইসি) বৈঠকে সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে অগ্রগতি প্রতিবেদন নেবে—কে কীভাবে খেলোয়াড়দের নাম-ছবি ব্যবহারের অধিকার সুরক্ষিত করছে, তা নিয়েই হবে বিস্তারিত আলোচনা।যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

আইসিসি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের (ইউএসএসি) সদস্যপদ স্থগিত করেছে। সংস্থাটি নিয়ম ভঙ্গ, আর্থিক অনিয়ম ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার অভিযোগে জর্জরিত। ইউএসএসি দেউলিয়া ঘোষণা করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
আইসিসি জানিয়েছে, ইউএসএসি দেউলিয়া প্রক্রিয়া থেকে “সন্তোষজনকভাবে” না বেরোলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে না। আপাতত শুধুমাত্র ক্রিকেট-সংক্রান্ত কার্যক্রমে সীমিত অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সংকট নিরসন না করতে পারে, তবে ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে তাদের অংশগ্রহণ ঝুঁকিতে পড়বে।

🏏 আইসিসির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

এবারের সভায় আইসিসি তাদের মধ্যমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা পুনর্বিন্যাস করবে—নতুন অর্থায়ন, গেমস অন্তর্ভুক্তি ও বৈশ্বিক বিস্তারই যার মূল লক্ষ্য। ক্রিকেটকে কমনওয়েলথ, এশিয়ান ও অলিম্পিক গেমসে নিয়মিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করার কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে।
এছাড়া ২০২৭ থেকে ২০২৯ সালের বড় চারটি আইসিসি টুর্নামেন্টের (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, নারীদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও বিশ্বকাপ) যোগ্যতা নির্ধারণ কাঠামো নিয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে।

সব মিলিয়ে, দুবাইয়ের আইসিসি বোর্ড সভা এবার কেবল ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত নয়—বাণিজ্য,রাজনীতি ও খেলোয়াড়দের অধিকার—সব ক্ষেত্রেই তীব্র বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *