ঐকমত্য উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত চাপালে দায় সরকারের: ফখরুল

ঐকমত্য উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত চাপালে দায় সরকারের: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নয় মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় যে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার বাইরে কিছু গায়ের জোরে চাপিয়ে দিলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের কিসমত কেশুরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

ফখরুল অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “এটি সাধারণ মানুষ বোঝে না, আমরাও গ্রহণ করব না। এটা হচ্ছে জনগণকে বিভ্রান্ত করা এবং ভোট পিছানোর কৌশল।” তিনি অভিযোগ করে বলেন, “জোর করে আমাদের ওপর পিআর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। আমরা শত বছর ধরে সরাসরি ভোট দিয়ে আসছি—নিজের প্রার্থী ও প্রতীকে ভোট দেওয়া এ দেশের সংস্কৃতি।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। এবার যদি নির্বাচন পিছিয়ে যায়, তাহলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বিএনপি কেবল সেই পথেই থাকবে, যেটি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, “দিল্লিতে বসে দেশের সর্বনাশ করবেন না। এত সাহস থাকলে দেশে ফিরে আসুন। আমরা জেল খেটেছি, আপনারাও খান কিছুদিন।” তিনি দাবি করেন, “গণভবনের সামনে জনতার ঢল নামলে সেনাবাহিনীর ফোনে হাসিনা হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে গিয়েছিলেন—তখন জনরোষ এতটাই প্রবল ছিল যে মানুষ তাঁকে ছিঁড়ে ফেলতে পারত।”

জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “কিছু দল নিজেদের একমাত্র দেশপ্রেমিক ও সৎ দল বলে দাবি করছে, আবার ‘বেহেস্তের টিকিট’ বিক্রি করছে। বেহেস্তের টিকিট আল্লাহ ও নবী ছাড়া কেউ দিতে পারে না। এভাবে ধর্মের অপব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, যা ইসলাম নয়।”

দলীয় পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তারেক রহমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ মাসের মধ্যে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে। মা–বোনদের জন্য ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনার ‘ফ্যামিলি কার্ড’ এবং কৃষকদের সার-বিষ-পানিসহ ইনপুট কেনার জন্য ‘ফার্মাস কার্ড’ চালু করা হবে।

তিনি আরও জানান, বিএনপি বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করতে চায়, যাতে বিচারকরা নির্ভয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।

সভায় ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ডা. আহম্মদ আলীর সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সাল আমিন, সাধারণ সম্পাদক মো. পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান তুহিনসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *