উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে মূল কারণ হিসেবে পাইলটের উড্ডয়নজনিত ত্রুটিকেই দায়ী করা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন সংশ্লিষ্ট কমিটি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, তদন্তে দেখা গেছে প্রশিক্ষণ চলাকালে পাইলটের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলেই বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে। তিনি বলেন,
“প্রশিক্ষণের সময় পাইলটের উড্ডয়নের মধ্যে ত্রুটি দেখা দেয়, যার ফলে পরিস্থিতি তার আয়ত্তের বাইরে চলে যায় এবং এ দুর্ঘটনা ঘটে।”
তদন্ত কমিটি প্রায় ১৫০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে—যার মধ্যে বিশেষজ্ঞ, প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরাও ছিলেন। তারা মোট ১৬৮টি তথ্য উদ্ঘাটন করে এবং ৩৩টি সুপারিশ প্রদান করে।
প্রতিবেদনে মূল সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তার স্বার্থে এখন থেকে বিমানবাহিনীর সব প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে পরিচালিত হবে।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনটি রাজউকের বিল্ডিং কোডের অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত হয়েছিল। ভবনে যেখানে তিনটি সিঁড়ি থাকার কথা ছিল, সেখানে ছিল মাত্র একটি—ফলে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।
এছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়—
- বরিশাল ও বগুড়ার রানওয়ে সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়েছে।
- বিমানবন্দরের আশপাশে ‘ফোম টেন্ডার’ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- টেকঅফ ও ল্যান্ডিংয়ের পথে হাসপাতাল, স্কুল, গুদাম বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে কঠোর উচ্চতা-নিয়ন্ত্রণ বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- দেশের বিদ্যমান বিমানবন্দরগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিধ্বস্ত হয়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ৩৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

