“নতুন বছর, নতুন বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় এক ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত এই শো ছিল দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহায়তায় এই ড্রোন শো অনুষ্ঠিত হয়।
ড্রোন শোতে ফুটে ওঠে জাতির সংগ্রামের বিভিন্ন প্রতীকী মুহূর্ত— গণ-অভ্যুত্থানে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ‘আবু সাঈদ’, পানির বোতল হাতে প্রতীকী ‘মুগ্ধ’, ‘২৪-এর বীর’, ‘পায়রার খাঁচা ভাঙা’ থিম এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা’র মতো আবেগময় চিত্র।
তবে ড্রোন শোতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের ছবি অনুপস্থিত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
এই প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। রাত ১১টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এই অনুপস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি লেখেন,
“কয়েক সপ্তাহের টানা ব্যস্ততার পর ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফিরে দেখি ছাত্রদলের ভাই-বোনদের বিবৃতি। হয়তো ব্যক্তিগতভাবে কথা বলে এই ভুল-বোঝাবুঝি দূর করা যেত। কিন্তু আমি এখানে, প্রকাশ্যেই লিখছি— আজকের ড্রোন শোতে শহীদ ওয়াসিমের ছবি না থাকায় তাঁদের ব্যথিত হওয়া একেবারেই যৌক্তিক। আমিও সমানভাবে দুঃখিত।”
তিনি আরও লেখেন,
“যাত্রাবাড়ীর কোনো মাদরাসাছাত্রের ছবি না রাখতে পারাটাও আমার কষ্টের জায়গা। অনেককেই মিস করেছি। কিন্তু আইকনিক ইমেজ বাছাই, থিমেটিক ধারাবাহিকতা এবং সীমিত সংখ্যক চিত্র অন্তর্ভুক্তির বাধ্যবাধকতায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”
ফারুকী জোর দিয়ে বলেন,
“আমি শহীদদের দলে ভাগ করে দেখি না। জুলাইয়ের সব শহীদই আমাদের নায়ক। শুধু জুলাই নয়— গত ১৬ বছরে গুম, খুন, নির্যাতনের শিকার সবাই এই সংগ্রামের অংশ। তাঁদের ত্যাগেই ফ্যাসিবাদের পতন সম্ভব হবে। আমার লেখা পড়ে কেউ চাইলে বুঝতে পারবেন— আমি বরাবরই বলার চেষ্টা করেছি, সব শহীদের কথা।”
সবশেষে তিনি আহ্বান জানান,
“জুলাই জাদুঘরের দিকে তাকান। সেখানে আমাদের সময়ের সব শহীদ, গুম হওয়া ও নির্যাতিতদের গল্প রয়েছে। তাঁদের স্মরণ করতেই হবে, তাঁদের জন্য আমাদের মন খারাপ হতেই হবে। কারণ এই বেদনা আমাদের মন ও ইতিহাস— দুটোই শুদ্ধ করে। সব শহীদ ও গুম হওয়া মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।”