আন্দামান সাগরে থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া সীমান্তে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বহু রোহিঙ্গা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, যার ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ার ল্যাংকাউই দ্বীপের পুলিশ প্রধান খাইরুল আজহার নুরুদ্দিন জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে একটি জাহাজে উঠেছিল। বৃহস্পতিবার তাদের দুটি দলে ভাগ করে দুটি নৌকায় পাঠানো হয়। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ল্যাংকাউইয়ের কাছে ডুবে যাওয়া নৌকায় অন্তত ৭০ জন যাত্রী ছিল। অন্য নৌকায় ২৩০ জনের যাত্রীর বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
উদ্ধারকাজে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ অংশগ্রহণ করেছে। উদ্ধার হওয়া ১১ মরদেহের মধ্যে দুই নারীসহ চারজনের মরদেহ থাইল্যান্ডে উদ্ধার করা হয়েছে, বাকি সাতটি মরদেহ এবং ১৩ জন জীবিত রোহিঙ্গাকে মালয়েশিয়ার উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার করেছেন। থাইল্যান্ডের সাতুন প্রদেশের গভর্নর সাক্রা কপিলাকার্ন জানিয়েছেন, দেশটির নৌবাহিনী ও মেরিন পুলিশ অনুসন্ধান অভিযান শুরু করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের শুরুর দিকে ৫,১০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা নৌকায় করে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০০ জন মারা গেছেন বা নিখোঁজ রয়েছেন।
রাখাইনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘আরাকান প্রজেক্ট’-এর পরিচালক ক্রিস লেওয়া জানিয়েছেন, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একাধিক নৌকা কক্সবাজার থেকে মালয়েশিয়ার জলসীমায় পৌঁছাতে সাধারণত এক থেকে দেড় সপ্তাহ সময় নেয়।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যার পর কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে অনেকেই উন্নত জীবনের আশায় প্রতি বছর সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই যাত্রায় একজন রোহিঙ্গাকে ৩,২০০ থেকে ৩,৫০০ ডলার (৩ লাখ ৫২ থেকে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা) দিতে হয়। কিন্তু নৌকাগুলো প্রায়ই দুর্বল হওয়ায় ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং প্রাণহানির শিকার হন অনেকেই।
সূত্র: রয়টার্স

