গাজায় জাতিগত হত্যাযজ্ঞের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ইস্তাম্বুলের প্রসিকিউটর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পরোয়ানার তালিকায় মোট ৩৭ জন ইসরায়েলি কর্মকর্তা আছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্ৎজ, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির। যদিও সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
তুরস্ক অভিযোগ করেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ধারাবাহিকভাবে জাতি হত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে আসছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ৫০০ জন নিহত হন। এছাড়া ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস করে, গাজাকে অবরুদ্ধ করে মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়।
তুরস্ক-ফিলিস্তিন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের ওপর ইসরায়েলি বোমা হামলার কথাও উল্লেখ করেছে প্রসিকিউটর কার্যালয়। দেশটি জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল তুরস্কের এ পদক্ষেপকে ‘প্রচারণার কৌশল’ বলে দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক্সে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেন, “ইসরায়েল ঘৃণাভরে এই হাস্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করছে।”
ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস তুরস্কের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এটি তুর্কি জনগণ ও নেতৃত্বের মানবিক অবস্থানের প্রতিফলন।
এর আগে ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহু ও তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। একই অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে, যেখানে তুরস্কও পরবর্তীতে যোগ দেয়।
গাজা যুদ্ধে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬৮ হাজার ৮৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

