ভারতকে হারিয়ে ১৮ কোটি মানুষের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দিলেন হামজা

ভারতকে হারিয়ে ১৮ কোটি মানুষের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দিলেন হামজা

২২ বছরের অপেক্ষার পর ভারতের বিপক্ষে পাওয়া ঐতিহাসিক জয়ের রাতটি যেন পুরো দেশের আবেগে ভর করে ছিল। এমন জয়ের পর আর ২২ বছর অপেক্ষা নয়—বাংলাদেশ এখন জিততে শিখেছে, বিশ্বাস জন্মেছে আরেকটি বড় জয়ের। সেই বিশ্বাসের বড় কারণ দলের অন্যতম তারকা ও যোদ্ধা—হামজা চৌধুরী। মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত ফুটবলযুদ্ধ জিতে বাংলাদেশ যে রাতটি উপহার দিয়েছে, তা ছুঁয়ে গেছে দেশের কোটি মানুষের হৃদয়।

এই জয়ের পর নিজের উচ্ছ্বাস সামলাতে পারেননি লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার হামজাও। ভারতকে হারানোর আনন্দে তিনি খুঁজে পেয়েছেন এফএ কাপ জয়ের সমান তৃপ্তি। ২০২০–২১ মৌসুমে লেস্টারের হয়ে ইংল্যান্ডের এ মর্যাদাপূর্ণ শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। তবে বাংলাদেশের জার্সিতে পাওয়া এই জয় তার কাছে আরও বড়।

“আজ আমরা ১৮ কোটি মানুষকে খুশি করেছি, তাই এর সঙ্গে অন্য কোথাও কিছুই তুলনা করা যায় না।”
—হামজা চৌধুরী

জাতীয় দলের জার্সিতে এটি তার প্রথম জয়। এই স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত নিয়ে হামজা বললেন, এটি তার বহু স্বপ্নের মধ্যে একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন। তিনি আশা করছেন শিগগিরই বাংলাদেশ কোনো বড় টুর্নামেন্টেও যোগ্যতা অর্জন করবে।

১১ মিনিটে শেখ মোরসালিনের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ভারত একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করেছে বাংলাদেশের ডিফেন্সকে। তবে শেষ মিনিট পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ডিফেন্ডাররা, আর হতাশার মুখেই পড়তে হয় সফরকারীদের। কিছু কিছু আক্রমণ ছিল গোল হওয়ার মতোই, কিন্তু ভাগ্য এবার ছিল বাংলাদেশের সঙ্গেই। এ প্রসঙ্গে হামজার সহজ উত্তর—“ভাগ্য নিজেকেই তৈরি করতে হয়।”

ম্যাচটিকে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা দেখেছেন ২০২৭ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হিসেবে। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বারবারই বলছিলেন—এখন শুধু ভালো খেলা নয়, দরকার ফল। আর তার শিষ্যরা সেই কাজটিই করে দেখালেন।

জয়ের পরও কাউকে আলাদা করে কৃতিত্ব দিতে চাননি কাবরেরা। তিনি বলেন,
“আজ একজনকে বেছে নেওয়া অসম্ভব। সবাই দুর্দান্ত খেলেছে। দলের প্রতিটি সদস্য এই জয়ের ভাগীদার।”

শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে ম্যাচ হারানো বা ড্র করার হতাশা অতীত দুই ম্যাচে পেয়েছিল বাংলাদেশ—নেপাল ও হংকংয়ের বিপক্ষে। সেসব স্মৃতি পেছনে ফেলে এবার নিজেদের ওপর বিশ্বাস রেখে দল সামাল দিয়েছে চাপের মুহূর্তগুলো। কোচের ভাষায়, দল একে অপরের জন্য আত্মত্যাগ করল বলেই সম্ভব হয়েছে এই জয়।

দর্শকে উপচে পড়া জাতীয় স্টেডিয়াম, গ্যালারির গর্জন আর মাঠে লাল-সবুজের অপরাজেয় লড়াই—সব মিলিয়ে এই রাতটি হয়ে থাকবে স্মরণীয়। ভারতের হার, বাংলাদেশের উল্লাস—এমন রাত আবার আসবে, এবার ২২ বছর নয়, হয়তো আরও দ্রুতই।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *