ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে একটি বিশাল সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম শরিম মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) জানিয়েছে, এই ঘাঁটির নির্মাণে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের খরচ হতে পারে। মার্কিন সরকার পরিকল্পনা করছে, ঘাঁটিতে হাজারের বেশি সেনা এবং ভারী অস্ত্র রাখা হবে।
ইরানি গণমাধ্যম প্রেস টিভি শরিমের বরাতে এই খবর প্রকাশ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে এই পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, কারণ অনেক বিশ্লেষকের মতে, এটি ইসরাইলকে সমর্থন করে নতুন কোনো আগ্রাসনের ইঙ্গিত হতে পারে।
শরিমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকার এই ঘাঁটি ওয়াশিংটনকে সরাসরি ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কাজ করার সুযোগ দেবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব কৌশল অনুযায়ী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। গত সপ্তাহে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমেরিকার প্রতিনিধি দল সম্ভাব্য স্থান নিয়ে আলোচনা করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় চলমান সংঘাতের কারণে আন্তর্জাতিক ক্ষোভ যখন তীব্র, তখন এই ধরনের পরিকল্পনার খবর প্রকাশ করা হলো। তাদের ধারণা, ইসরাইল হয়তো আন্তর্জাতিক চাপ সাময়িকভাবে কমাতে মিত্র দেশগুলোর মাধ্যমে নিজের লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে, এই ধরনের পদক্ষেপ কেবল এক দখলদার শক্তিকে অন্য কোনো বিদেশি সেনার মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা মাত্র। গাজার হামাসের সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক আল জাজিরা বলেছেন, “আমরা এমন কোনো বাহিনী গাজায় মেনে নিতে পারি না, যা ইসরাইলি দখলদার সেনাদের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।”
এদিকে, নভেম্বরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছিল। এতে বলা হয়েছে, ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (ISF)’ নামে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠিত হবে, যার নেতৃত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, কাতার ও মিশর। এই বাহিনী অন্তত দুই বছর গাজায় অবস্থান করবে এবং পুনর্গঠন ও নিরাপত্তার অজুহাতে স্থানীয় প্রতিরোধ কাঠামো ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সমালোচকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ আসল সমস্যাগুলো—যেমন ইসরাইলি দখল, যুদ্ধাপরাধের দায়বদ্ধতা, এবং ফিলিস্তিনিদের স্বায়ত্তশাসন ও ক্ষতিপূরণের অধিকার—সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছে। সেই অবস্থায় মার্কিন ঘাঁটির নির্মাণের খবর নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

