সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুতির প্রায় ১৫ মাস পর এক নতুন মন্তব্য করেছেন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সিএনএন-নিউজ এইটিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান ও সরকারের পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র বা কোনো পশ্চিমা শক্তির সরাসরি ভূমিকা ছিল না।
হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে ভালো ও স্থিতিশীল, তাই ওয়াশিংটন বা অন্য কোনো বিদেশি শক্তির সরাসরি হস্তক্ষেপের ধারণা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস পশ্চিমা বিশ্বে সুসম্পর্ক তৈরি করেছিলেন, যা কিছু ব্যক্তি ভুলভাবে গণতান্ত্রিক যোগ্যতা হিসেবে দেখেছেন। এছাড়া হাসিনা তার ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো ছিল বলে উল্লেখ করেন।
গত বছরের জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করলে, আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ও সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলার ফলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। জনরোষ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই গণ-অভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। একই মামলায় তার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের দাবি করা হয়েছে। রায় ঘোষণা হবে আগামী ১৭ নভেম্বর।
বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এসব মানবতাবিরোধী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টের প্রহসন’, এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালানোর কোনো নির্দেশ তিনি দেননি। হাসিনা দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে হলে তা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে করা উচিত।

