ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ যেখানে প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের নাম, সেখানে সেই আক্রমণাত্মক স্টাইলকেই উল্টো অস্ত্র বানিয়ে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত জয় তুলে নিল অস্ট্রেলিয়া। পার্থে মাত্র দুই দিনেই ৮ উইকেটের বড় জয়ে সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
বোলারদের দাপটে প্রথম দিন
পার্থ টেস্টের প্রথম দিন ছিল পুরোপুরি বোলারদের। ব্যাট হাতে নামতেই ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭২ রানে। তবে পাল্টা ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থাও ভালো ছিল না—দিনের শেষে তাদের স্কোর ১২৩/৯।
দ্বিতীয় দিনের সকালে বাকি উইকেটটি হারিয়ে ১৩২ রানে থামে অজিদের ইনিংস। ফলে ইংল্যান্ড পায় ৪০ রানের লিড। কিন্তু এই লিডকে বড় করতে পারল না তারা। মিচেল স্টার্কের ভয়ংকর স্পেল আর স্কট বোল্যান্ড–ব্রেন্ডন ডগেটদের আগ্রাসী বোলিংয়ে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে থেমে যায় ১৬৪ রানে। মোট লিড দাঁড়ায় মাত্র ২০৪।
‘বাজবলকে বাজিয়ে দিল’ ট্রাভিস হেড
২০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের বাজবলকেই বাজিয়ে দিল ট্রাভিস হেডের তাণ্ডবে। মাত্র ৬৯ বলে সেঞ্চুরি করে তিনি অ্যাশেজ ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি ও টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চম দ্রুততম তিন অঙ্কের ইনিংসের কীর্তি গড়েন।
হেডের ৬৯ বলে সেঞ্চুরি ভেঙে দেয় ১৯০২ সালে ইংলিশ ব্যাটার গিলবার্ট জেসপের ৭৬ বলে করা রেকর্ডটি। অ্যাশেজে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি অবশ্য এখনও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের—২০০৬–০৭ আসরে পার্থে ৫৭ বলে।
হেডের ইনিংসে ছিল আগ্রাসী পুল–ড্রাইভ–র্যাম্প শটের ঝড়, যার কোনো জবাব ছিল না ইংলিশ বোলারদের কাছে। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের দৌলতেই ২৯ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
দুই দিনেই টেস্ট শেষ—অ্যাশেজে বিরল ঘটনা
এই জয়ের মাধ্যমে আধুনিক অ্যাশেজ যুগে দুই দিনের মধ্যে টেস্ট শেষ হওয়ার ঘটনা দেখা গেল বহুদিন পর। ম্যাচটি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাট–বল দুই বিভাগের দাপটে একতরফাভাবে নিজেদের করে নেওয়ারই নিদর্শন।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ৪ ডিসেম্বর, ব্রিসবেনে। ইংল্যান্ড কি ফিরতে পারবে নাকি অস্ট্রেলিয়া আরও এগিয়ে যাবে—এখন সেদিকেই চোখ ক্রিকেট দুনিয়ার।

