অর্থনীতিতে বেহাল ভারত, ব্যবসায়ীদের চরম আর্তনাদ

অর্থনীতিতে বেহাল ভারত, ব্যবসায়ীদের চরম আর্তনাদ

১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের পর ভারতীয় হাইকমিশন নিরাপত্তাজনিত কারণে কর্মী প্রত্যাহার এবং সাময়িক ভিসা প্রদান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এর ফলে, দুই দেশের মধ্যে ভিসা প্রাপ্তি সীমিত হয়ে যায় এবং রেলপথে যাত্রীসেবা বন্ধ হওয়ার কারণে অর্থনৈতিকভাবে দুই দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে, ভ্রমণ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ব্যবসায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হলো? ভিসা বন্ধ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতির ফলে দুই দেশের অর্থনীতি ও ভ্রমণ খাত কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা বোঝা জরুরি।

সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিরা চিকিৎসা এবং পর্যটন উদ্দেশে যান। অন্যদিকে, ভারতীয় নাগরিকরা উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে বাংলাদেশে আসেন। প্রতিবছর প্রায় ২৪,৭০,০০০ বাংলাদেশি মেডিকেল ট্যুরিস্ট ভারতে যান, যার ফলে প্রতিবছর প্রায় ৫০,০০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যায়।

ভারতের পর্যটন খাতে বাংলাদেশের অবদানও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের মোট পর্যটক সংখ্যা থেকে ২১.৫৫% বাংলাদেশি, যার মাধ্যমে ভারতের আয় প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার হয়। এই তথ্য থেকে পরিষ্কার হয় যে, বাংলাদেশি পর্যটকরা ভারতের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।

ভারত থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। যদিও বাংলাদেশে কতজন ভারতীয় কাজ করেন তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি, তবে অনুমান করা হচ্ছে, প্রায় ৫,০০,০০০ ভারতীয় বাংলাদেশে রয়েছেন যারা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে এখানে কাজ করছেন। ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ হলে, বাংলাদেশে অবৈধভাবে কাজ করা অনেক বিদেশি নাগরিকের কাজের সুযোগ সীমিত হবে, যা দেশে বেকারদের জন্য নতুন চাকরি সৃষ্টি করতে পারে।

কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিট, যাকে ‘মিনি বাংলাদেশ’ বলা হয়, সেখানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ভিড় ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই রাস্তা ও অলিগলিগুলো প্রায় ফাঁকা হয়ে পড়েছে। কলকাতার নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এখন বাংলাদেশি ক্রেতাদের দিকে তাকিয়ে আছেন, কিন্তু এখন সেখানে ক্রেতা নেই, ফলে ব্যবসাও স্থবির হয়ে গেছে।

বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে ভারত নিজ দেশের নাগরিকদেরও সমস্যায় ফেলেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশি ক্রেতা না থাকায় কলকাতার ব্যবসায়ীরা এবং সেখানকার অন্যান্য পেশার মানুষ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *