বিজয়ের সেঞ্চুরিতে বিপিএলে নতুন ইতিহাস 

বিজয়ের সেঞ্চুরিতে বিপিএলে নতুন ইতিহাস 

শেষ ওভারে দুর্বার রাজশাহীর দরকার ছিল ১৭ রান। আর দলের অধিনায়ক আনামুল হক বিজয়ের সেঞ্চুরির জন্য দরকার ছিল ৯ রান। খুলনা টাইগার্সের পেসার হাসান মাহমুদের ওভার থেকে উঠল ঠিক ঠিক ৯ রানই। ৫৭ বলে নিজের প্রথম বিপিএল সেঞ্চুরিটা বিজয় পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু মিস করে গিয়েছেন দলের জয়। খুলনা ফিরলো জয়ে আর রাজশাহী খুব কাছ থেকেও হতাশ করল আরেকবার।

৯ চার এবং ৫ ছক্কায় সাজানো ৫৭ বলে ১০০ রানের ইনিংসটা দলকে জেতায়নি, তবে বিজয়ের নামটা বিপিএলের নতুন একটা ইতিহাস গড়ে দিয়েছে দারুণভাবে। চলতি বিপিএলে ৭ম সেঞ্চুরিটা এলো রাজশাহী অধিনায়কের ব্যাট থেকে। বিপিএলের কোনো এক নির্দিষ্ট আসরে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডটাও হয়ে গেল সেই সুবাদে।

বিপিএলের ২০১৯ আসরে দেখা গিয়েছিল ৬ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে এতদিন সেটাই ছিল সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১২, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ছিল ৪ সেঞ্চুরি। আর ২০২৫ আসরে ২২তম ম্যাচেই দেখা গেল ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি। আর ২৬তম ম্যাচে এসে ভাঙলো বিপিএলের পূর্বের রেকর্ড।

এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিটা চিটাগাং কিংসের পাকিস্তানি ব্যাটার উসমান খানের। ঢাকা পর্বের শেষ ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে করেছিলেন সেঞ্চুরি। থেমেছিলেন ১২৩ রান করে। ৬২ বলে ১৩ চার ও ৬ ছক্কায় থেমেছিলেন পাকিস্তানি এই ব্যাটার। পরের ম্যাচেই খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ঢাকা ক্যাপিটালসের অধিনায়ক থিসারা পেরেরা ইনিংসের শেষ বলে পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা।

সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে শতরান হাঁকান রংপুর রাইডার্সের অ্যালেক্স হেলস। ৫৬ বলে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন এই ইংলিশ ব্যাটার। আর তার সেই সেঞ্চুরির সুবাদে প্রথমবার বিপিএলে দেখা মেলে টানা ৩ ইনিংসে সেঞ্চুরি। যা এর আগে কখনোই দেখা যায়নি।

সিলেট পর্বেই বিপিএল পেয়ে যায় পরের দুই সেঞ্চুরি। সেই সেঞ্চুরি দুটো এসেছিল লিটন দাস এবং তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাট থেকে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সেই দুই সেঞ্চুরি জন্ম দিয়েছিল বহু রেকর্ডের। ফ্র্যাঞ্চাইজ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় জুটি, বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ কিংবা বিপিএলে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরি সবই দেখা গিয়েছিল দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে সেই ম্যাচে।

আর ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি দেখা গেল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। চিটাগাং কিংসের বিদেশি ব্যাটার গ্রাহাম ক্লার্ক ৪৮ বলে ৭ চার এবং ৬ ছক্কায় সাজালেন দুর্দান্ত সেই ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৫০ বলে ১০১ রানে থেমেছিলেন ৩১ বছর বয়েসী এই ইংলিশ ব্যাটার। আর ৭ম সেঞ্চুরির মালিক এনামুল হক বিজয়।

এর আগে ২০১৯ আসরে সেঞ্চুরি করেছিলেন লরি ইভান্স, অ্যালেক্স হেলস, রাইলি রুশো, এভিন লুইস, এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং তামিম ইকবাল। সেই বছরের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল ২০১৯-২০ বিপিএল আসর। ২১ ডিসেম্বর আন্দ্রে ফ্লেচার এবং ২৪ ডিসেম্বর দাভিদ মালান পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি। সবমিলিয়ে ২০১৯ সালে এসেছিল ৮ সেঞ্চুরি।

এক বছরে বিপিএলে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড সেটাই। চলতি বিপিএলে এখন পর্যন্ত বাকি আছে আরও ২০ ম্যাচ। সামনের দিনে সেঞ্চুরির সেই রেকর্ড ভাঙতে দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকছে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *