ঈদএর দিনও যেভাবে ফিলিস্তিনকে স্মরণ করলেন হামজা

ঈদএর দিনও যেভাবে ফিলিস্তিনকে স্মরণ করলেন হামজা

তখনও বাংলাদেশি হিসেবে ফুটবল খেলার স্বীকৃতি পাননি হামজা দেওয়ান চৌধুরী, এবং বয়সও ছিল বর্তমানের তুলনায় কিছুটা কম। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ফিলিস্তিনের পতাকা গায়ে হেঁটে তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন। এর কিছু আগেই তিনি লেস্টার সিটির হয়ে এফএ কাপের শিরোপা জিতেছিলেন। তখনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে, হামজা দখলদার ইসরায়েলের বিপক্ষে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন রাখেন। এবারের ঈদুল ফিতরেও তিনি ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতি স্মরণ করেছেন।

গতকাল (মঙ্গলবার) বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয় মহাসমারোহে। এদিন সকালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) একটি ভিডিও বার্তায় সদ্য আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হওয়া হামজা দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। সেখানে তিনি বলেন, “আমি এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন। আপনাদের সঙ্গে শিগগিরই দেখা হবে ইনশা-আল্লাহ।”

পরে, মধ্যরাতে হামজা তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঈদ উদযাপনের তিনটি ছবি শেয়ার করেন। এক ছবিতে দেখা যায়, ইংল্যান্ডের এক স্টেডিয়ামে ঈদের নামাজ পড়ার আগে। আরেকটি ছবিতে তাকে বেশ আনন্দিত অবস্থায় দেখা যায়, এবং তৃতীয় ছবিতে তার হাতে একটি বিশেষ ব্রেসলেট দেখা যায়, যার কালো ফিতার সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে লকেট আকারে একটি ছোট ফিলিস্তিনি পতাকা।

দুটি ছবিতেই সেই পতাকা দেখা যায়, তবে তৃতীয় ছবিটি তা আরও স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে। ঈদের আনন্দের মাঝেও হামজার মন ফিলিস্তিনের জন্য বেদনাহত। আরও একটি ছবিতে হামজা কালো পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় তার হাতের নিচে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ‘কেফিয়াহ’ স্কার্ফটি পরেছিলেন, যা কালো ও সাদা রঙের।

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ফুটবলারদের প্রতিবাদ শুরু থেকেই ছিল, তবে মাঠে পতাকা ওড়ানোর রীতি প্রবর্তনের অন্যতম অগ্রদূত ছিলেন হামজা। সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, গ্যালারিতে ফিলিস্তিনের পতাকা দেখে যদি তার দল ম্যাচ জিততে পারে, তাহলে তিনি মাঠে পতাকা ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। পরে তিনি স্টেডিয়ামের এক নিরাপত্তারক্ষীকে দিয়ে সেই পতাকাটি আনিয়ে নেন। ফিলিস্তিনের প্রতি তার সমর্থন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে হামজা ও ফ্রান্সের ডিফেন্ডার ওয়েসলি ফোফানা ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা আবারও শুরু হয়েছে যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভেঙে। এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনের পর, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ৩৫৭ জনে পৌঁছেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *