বাবলা হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড় — তদন্তে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাবলা হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড় — তদন্তে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি প্রচারণায় সরাসরি গুলি করে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলা হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত করেছে, এই কিলিং মিশনে চারজন সরাসরি অংশ নেয়। এরই মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব, আরেকজনকে ধরেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে বাবলার বাবা আবদুল কাদের বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা করেন। মামলায় আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে ‘বড় সাজ্জাদ’-কে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আরও সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ১৪–১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া চারজন হলেন—রায়হান আলম (৩৫), মোবারক হোসেন ইমন (২২), বোরহান উদ্দিন (২৭) ও মো. খোরশেদ (৪৫)। এদের মধ্যে রায়হানকে ‘বড় সাজ্জাদ’-এর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সূত্র জানায়, বাবলার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ঘাতকরা কাছ থেকে বিদেশি ৭.৬২ বোরের পিস্তল ব্যবহার করে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে—বাবলাকে খুব কাছ থেকে একাধিকবার গুলি করা হয়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গুলিটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৭.৬২ বোরের, যা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মৃত্যু নিশ্চিত করে।

র‌্যাব-৭ এর অভিযানেও নতুন তথ্য মিলেছে। শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান জানান, গ্রেফতার দুই আসামি আলাউদ্দিন ও হেলাল প্রাথমিকভাবে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও বড় সাজ্জাদের বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের তথ্য দিয়েছে। বিস্তারিত জানতে তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

অন্যদিকে নিহত বাবলার পরিবার দাবি করেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকা বড় সাজ্জাদই চট্টগ্রামের অপরাধজগত নিয়ন্ত্রণ করছে। মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, বালুমহাল দখল ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার—সবকিছুই তার নির্দেশে চলে।

এদিকে গুলিবিদ্ধ বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে হেলিকপ্টারে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁর বুক ও পায়ে গুলি লেগেছে, তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, বড় সাজ্জাদকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। একই সঙ্গে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে তারা।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *