বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি একটি ব্যক্তিস্মৃতিমাখা পোস্টে আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধীদলের ওপর গৃহীত প্রতিহিংসात्मक আচরণ, মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতভর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে তিনি একসময় জেলে কাটানো দিনগুলোর স্মৃতি শেয়ার করেছেন — যাতে রয়েছে তার মেয়েকে কারাগার থেকে দেওয়া একটি ব্যাগের হৃদয়স্পর্শী কাহিনী।
ফখরুল লেখেন, ঢাকার কারাগারে মেয়েকে দেখা করতে গিয়ে তিনি একটি ব্যাগ গিফট করেন, যা জেলের ভেতরে এক বন্দি বানিয়ে দিয়েছিল; সেই ব্যাগটি কিনে তিনি মেয়েকে দিয়েছিলেন। এই ছোট্ট ঘটনার স্মৃতি তার কাছে গভীর।
একই পোস্টে তিনি গত পনেরো বছরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, ‘বহু কর্মী মিথ্যা মামলায় বন্দি ছিলেন’—নিজে তিনি অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে একশোরও বেশি মামলা নেওয়া হয়েছিল। ময়লার গাড়ি পোড়ানো থেকে হত্যা মামলাসহ নানা ধরনের অভিযোগে দীর্ঘ সময় তিনি কারাবাসে কাটিয়েছেন এবং আড়াই বছরের বেশি সময় জেলে রাখার কথা উল্লেখ করেছেন।
ফখরুল আরও বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে ‘মুক্তির বিনিময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ’ প্রলোভনও দেখানো হয়েছিল; কিন্তু তারা ‘প্রহসনের নির্বাচন’-এ যোগ দেননি। ফলস্বরূপ তাঁকে সাত বার জামিন স্থগিত করে রাখা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন।
পোস্টে তিনি কারাগারে থাকা সাধারণ দলের কর্মীদের ওপর যেসব নির্যাতনের চিত্র দেখেছেন, তা বর্ণনা করে গভীর ব্যথা প্রকাশ করেন—শরীরে জোরালো আঘাতের দাগ, পড়াশোনার ক্ষতি, পরিবারে ভাঙন; সেইসব ক্ষত যা বহু কর্মীর জীবনেই স্থায়ীভাবে প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘মাঠের রাজনীতি ছাড়া যারা জানে না, তারা নিজেদের উন্নত অবস্থান থেকে এ নির্যাতন বুঝতে পারবে না।’
অবশেষে, ফখরুল স্পষ্ট করে দেন যে তিনি প্রতিশোধের রাজনীতির পক্ষপাতী নন; তাঁর লক্ষ্য দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি। তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়বিচারপন্থী ব্যবস্থা গড়াই তাদের উদ্দেশ্য—যেন যে কেউ অন্যায় না করে হয়রানির শিকার না হয়।

