টেম্বা বাভুমার এক সাহসী সিদ্ধান্তেই বদলে গেল কলকাতা টেস্টের মোড়। ভারতের তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ৪৭ রান, হাতে মাত্র ৩ উইকেট। তবে শুবমান গিল হাসপাতালে থাকায় কার্যত ওভারে ভরসা ছিল অক্ষর প্যাটেলের ওপরই। এমন পরিস্থিতিতে বাভুমা বোলিংয়ে আনলেন বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজকে—যা ধারাভাষ্যকক্ষে অনেককেই অবাক করেছিল।
প্রথম চার বলেই অক্ষর মারলেন দুই ছক্কা ও এক চার। দক্ষিণ আফ্রিকার পরিকল্পনা যেন ভেঙে পড়ছিল। কিন্তু পরের মুহূর্তেই ফের টানটান উত্তেজনা। ছক্কার লোভে পঞ্চম বলেই অক্ষর তুলে দিলেন ক্যাচ, সেটিও আবার বাভুমার হাতে। ঠিক পরের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ সিরাজ। মাত্র ৯৩ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত।
১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত ব্যর্থ হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট জিতে নেয় ৩০ রানে—এটাই ভারতের মাটিতে তাদের প্রথম জয় ১৫ বছরে।
অধিনায়ক বাভুমার হাত ধরে দেড় দশক পর সাফল্য
প্রোটিয়াদের এই ঐতিহাসিক জয়ে বাভুমাই সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে বিপর্যস্ত অবস্থায় ৯১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পরেও তাঁর অপরাজিত ৫৫ রানে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছায় ১৫৩–তে। ৪৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন করবিন বশকে সঙ্গে নিয়ে। অন্য কোনো ব্যাটসম্যান ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি।
অধিনায়ক হিসেবে বাভুমা এখনো অপরাজিত—১১ টেস্টে তাঁর নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ১০টি, ড্র ১টি।
হারমার–ইয়ানসেনের স্পিন–পেসে গুঁড়িয়ে ভারত
বল হাতে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন সাইমন হারমার। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও নিলেন আরও ৪টি। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন এই অফস্পিনার। ধারাবাহিকভাবে ভারতের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন তিনি—জুরেল, পন্ত, জাদেজা কেউই টিকতে পারেননি।
শুরুতেই ওপেনার জয়সোয়াল ও রাহুলকে আউট করে ম্যাচের ভিত গড়ে দেন পেসার মার্কো ইয়ানসেন। পার্টটাইম স্পিনার এইডেন মার্করামও তুলে নেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট ওয়াশিংটন সুন্দরকে (৩১)।
রেকর্ডের টেস্ট
এই ম্যাচে চার ইনিংসের কোনোটিতেই কোনো দল ২০০ রান করতে পারেনি—ভারতের মাটিতে প্রথমবার এমন ঘটনা। ১৯৫৯ সালের পর বিশ্ব ক্রিকেটেও আর হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৫৯ ও ১৫৩
(বাভুমা ৫৫*, বশ ২৫; জাদেজা ৪/৫০, কুলদীপ ২/৩০)
ভারত: ১৮৯ ও ৯৩
(সুন্দর ৩১, অক্ষর ২৬; হারমার ৪/২১, ইয়ানসেন ২/১৫)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: সাইমন হারমার

