বঙ্গোপসাগরে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি দুর্বল নিম্নচাপ তীব্র হয়ে ‘সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলে’ পরিণত হয়েছে, যা সোমবার আরও শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। মাত্র দুই দিনে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় জনমনে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ পাশে ২৬-২৭ নভেম্বরের মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ এবং সর্বশেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। যদিও সব মডেল একমত যে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হবে, কিন্তু তার শক্তি ও স্থলভাগে আঘাতের সম্ভাব্য স্থান নিয়ে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া মডেলে ভিন্নতা দেখা দিচ্ছে।
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূল পর্যন্ত যেকোনো স্থানে ঘূর্ণিঝড় আঘাত করতে পারে। আরও স্পষ্ট পূর্বাভাস পাওয়া যাবে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে, যা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি এবং সম্ভাব্য ভূপৃষ্ঠ সংস্পর্শ নির্ধারণে সাহায্য করবে।
কৃষকদের জন্য পরামর্শ:
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তাই পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শীতকালীন শাক-সবজি চাষিরা বীজ বোনা ও সেচ দেওয়ার সময় এই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা মাথায় রাখবেন। ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রৌদ্রোজ্জল আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য পরামর্শ:
১ ডিসেম্বর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। ১ ডিসেম্বরের মধ্যে উপকূলে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ৩০ নভেম্বরের পরে নতুন করে সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার সতর্কতা রয়েছে। এছাড়া ১ থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রও প্রচণ্ড উত্তাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

